TextileGenesis™ এ আমরা প্রায়ই শুনতে পাই উৎস খুঁজে পাওয়া ব্যবসার একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠছে। নিয়ন্ত্রণ আরোপ বেড়ে যাওয়া, ভোক্তার কাছে পণ্যের পরিবেশবান্ধব অবস্থার কথা তুলে ধরতে ব্র্যান্ডগুলোর চাহিদা এবং বৈশ্বিক পণ্য উৎপাদন ক্ষমতার পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোর কারণে কাঁচামাল কোথা থেকে আসছে এবং কীভাবে সেগুলো পণ্যে রূপান্তরিত হচ্ছে সেটি জানা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
উৎস খুঁজে পাওয়া কী? বা এর প্রয়োজন আছে কিনা?- অনেক ব্র্যান্ড বা খুচরা বিক্রেতাদের জন্য এগুলো মূল প্রশ্ন নয় বরং একে যতটা সম্ভব দ্রুত ও কার্যকরভাবে ব্যবসার মধ্যে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়- সেটিই মূল বিষয়। পরিবর্তনের জন্য সবসময়ই প্রয়োজন হয় সময় ও বিনিয়োগ। আর তাই প্রকৃত অর্থে কী পরিমাণ, কতটা দ্রুত এবং কীভাবে বিনিয়োগ কাজ করবে- সেটিই মূলকথা।
উদ্ভাবন থেকে দক্ষতা, আবার দক্ষতা থেকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা- ব্যবসায়িক দিক থেকে একটি ব্র্যান্ডের কার্যক্রমের প্রতিটি ক্ষেত্রে উৎস খুঁজে পাওয়া বিশেষ ভূমিকা রাখে। তবে বর্তমানে এর তিনটি আবশ্যিক দিক হলো:
- ১। আস্থা: একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পেছনে গ্রাহক ও অংশীদারদের অনেক কারণই থাকতে পারে- তবে আস্থার কারণেই তারা সবাই বেশি প্রভাবিত হয়। কোনো ব্যবসাই আজ মানুষ ও পৃথিবীর ওপর এর প্রভাব উপেক্ষা করতে পারে না। ব্যবসার পরিবেশবান্ধবকতা ও প্রভাব সম্পর্কে কথা বলা সহজ হলেও সেটি বাস্তবে প্রদর্শন বেশ কঠিন। কোনো ব্র্যান্ড তাদের পণ্যে কার্বন ‘ফুটপ্রিন্ট’ হ্রাস করা এবং পণ্যের মধ্যে পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান থাকার দাবি করলে, এর সপক্ষে নির্ভরযোগ্য প্রমাণও দেখাতে হবে। এটি এককভাবেই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পরিবেশবান্ধব বিষয় বেশি হলে বাজারে এর মান বাড়ে এবং এর ফলে মূল্যও বেড়ে যায়। বাণিজ্যিকভাবে ‘নেতিবাচক প্রচারকে’ প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে ‘আরও পরিবেশবান্ধব’ এবং ‘সাধারণ উপাদান’ এর মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন বা অসম্ভব বলা চলে। ২০০০ সালের অক্টোবরে বহুল প্রচারিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত থেকে জৈব তুলার নামে ২০,০০০ টন প্রতারণামূলক পণ্য বাজারে আনা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিকভাবে ‘ভুল লেবেলযুক্ত’ তুলার পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে। আর সমস্যাটি শুধু তুলা বা জৈব সনদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
- ২। দক্ষতা: মূল্য নির্ধারণ থেকে শুরু করে ‘পণ্যের বিল করার’ সময় পর্যন্ত- সবসময়ই ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা পণ্যের তথ্যের জন্য তাদের সরবরহকারীদের ওপর নির্ভর করেন। সাধারণত, নির্দিষ্ট তথ্যের ওপর নির্ভর করে পুরো একটি বিভাগ কাজ করে। ‘বায়িং’, ‘মার্চেন্ডাইজিং’ ও প্রযুক্তি এমনই কয়েকটি বিভাগের নাম। তবে, বর্তমানে নিয়ন্ত্রক ও গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের ধরন ভিন্ন। প্রস্তুতপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পণ্য কিংবা সরবরাহকারীর কার্যক্রম বা সেটি সম্পন্নের প্রক্রিয়া কোনো বিষয় নয়। বরং, মূল গুরুত্ব দেওয়া হয়- কাঁচামাল এবং সেখান থেকে পণ্য উৎপাদন এর জন্য মধ্যবর্তী কার্যক্রম গ্রহণকারী ও এর প্রক্রিয়ায়গুলোয়। এই তথ্য সরবরাহকারীর কাছে তৈরি হয় না এবং এর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও তারা ভালো অবস্থানে থাকে না। এর ফলে আমরা দেখি, বড় ব্র্যান্ডের বিভিন্ন টিম অব্যাহতভাবে তথ্য খুঁজে চলে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তারা ৩য় ও ৪র্থ স্তরের সরবাহকারী বা তাদের মধ্যেকার লেনদেনের সনদ সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পেতে ‘এলোমেলো ভাবে’ থাকা তথ্য মিলিয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করে। এই তথ্য কার্যকরভাবে ব্যবস্থাপণার জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন সমাধানের নকশা করা প্রয়োজন। ব্র্যান্ড বা খুচরা বিক্রেতাদের পক্ষে এককভাবে এমন সমাধান তৈরি অসম্ভব।
- ৩। নিয়মানুবর্তিতা: জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের নিয়মনীতিগুলো ধীরে ধীরে কঠিন হচ্ছে। কঠোরতর নীতিমালায় ব্র্যান্ডগুলোকে শুধু প্রস্তুতপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পণ্যই নয়, একই সঙ্গে সকল কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্যগুলোর উৎপাদনকারী দেশ সম্পর্কেও তথ্য জানাতে হয়। আর এ কারণে ব্র্যান্ডগুলোকে পুরো সরবরাহ প্রক্রিয়াই দৃশ্যমান ও সঠিকভাবে নথিভুক্ত রাখতে হয়। অবমুক্তির আদেশ (ডব্লিউআরও) না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ না করে পণ্য আবার স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। শুধু শ্রমিক নিয়ে উদ্বেগেই নয়, একই সঙ্গে নির্দিষ্ট ভৌগলিক অবস্থান, খাত ও শিল্পর কারণেও এমন ঘটনা ঘটছে। প্রকৃতপক্ষে, আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ব্যুরোতে (আইএলএবি) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী- যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে শিশুশ্রম ও জোরপূর্বক শ্রম দ্বারা উৎপাদিত পণ্যের তালিকায় ১১৯টি পণ্য উৎপাদনকারী দেশের নাম আছে, যারা পরবর্তী সময়েও ডব্লিউআরও এর শিকার হতে পারে। অন্য আইনপ্রয়োগকারীদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য একটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তারাও নতুন আইন করতে যাচ্ছে, যা একই রকম প্রভাব ফেলবে। এছাড়া বনাঞ্চল উজাড় ও অবৈধভাবে সামুদ্রিক প্রাণী শিকারের মতো উদ্বেগের বিষয়গুলোও তাদের আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিদ্যমান আইনের পাশাপাশি, কোনো দেশের জন্য পণ্যের ‘লেবেলে’ কী রাখা যাবে, কী রাখা যাবে না- সে বিষয়ে সচেতনতা ও নিয়মকানুনের চাপ বেড়েছে এবং আরও বাড়ছে।
নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে উৎস খোঁজার মানদণ্ড ভিন্ন, আর তাই এটি অর্জনে বিনিয়োগও ভিন্ন। তবে এর আস্থা, দক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
সরবরাহ প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করায় ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের গুরুত্ব বৃদ্ধির বিষয়টি বুঝতে পেরে ইউ.এস. কটন ট্রাস্ট প্রটোকল টেক্সটাইলজেনেসিস™ এ যুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম পরিবেশবান্ধব তুলা হিসেবে তারা সরবরাহ প্রক্রিয়া পুরো দৃশ্যমান করছে। ইউ.এস. কটন ট্রাস্ট প্রটোকল পরিবেশবান্ধব তুলা উৎপাদনের জন্য পরিমাপযোগ্য ও যাচাইযোগ্য লক্ষ্য এবং পরিমাপ নিয়ে এসেছে।
ইউ.এস. কটন ট্রাস্ট প্রটোকলে একজন সদস্য হিসেবে যোগদানের বিষয়ে আরও জানুন এই ঠিকানায়: trustuscotton.org
cottonusa.org/trust-protocol এর একজন প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে একটি ফর্ম পূরণ করুন।