কন্টেন্ট এড়িয়ে যাও

একজন বিশেষজ্ঞ দেখাচ্ছেন কেন তূলাই তূলনামূলক ভালো পছন্দ

প্রাকৃতিক আঁশ বেঁছে নিলে সাপ্লাই চেইনের ব্যবস্থাপকেরা চলে যান ‘ভারচুয়াস সার্কেল’-এ

‘ভারচুয়াস সার্কেল’ হচ্ছে একটা কাঙ্খিত ঘটনার প্রভাবে আরেকটি কাঙ্খিত ঘটনা ঘটা। পরপর এটা হতেই থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় অব্যাহতভাবে উন্নতি ঘটে। পোশাকশিল্পের সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপকেরা আঁশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটা সুষম স্কোরকার্ড পদ্ধতি বিবেচনায় নেন। সুষম স্কোরকার্ড পদ্ধতিটা ‘ভারচুয়াস সার্কেল’ করতে আটটি বিষয় বিবেচনায় থাকে। তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে সঠিক কাচামাল পছন্দ করা আর পছন্দসই সেই কাচামালের প্রাপ্যতার বিষয়টি। (https://www.just-style.com/ana...). এগুলোর গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও, আধুনিক আঁশ পছন্দ ও তার প্রাপ্যতার অনেক উপাদানকেই সাপ্লাই চেইনের ভেতরে অত্যন্ত দূর্বলভাবে উপলব্ধি করা হয়।

এখন পর্যন্ত তুলাই সর্বাধিক ব্যবহৃত ও সর্বাধিক পছন্দের প্রাকৃতিক আঁশ। ২০১৭ সালে বিশ্বে যে মোট ৯৪ মিলিয়ন টন আঁশ উৎপাদিত হয়েছিল, তার মধ্যে ৩৪ মিলিয়ন টন ছিল প্রাকৃতিক আঁশ। এর মধ্যে তুলার প্রতিনিধিত্ব ছিল ২৪ মিলিয়ন টনের, যেখানে উলের প্রতিনিধিত্ব ছিল মাত্র ১.১ মিলিয়ন টনের। গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য প্রাকৃতিক আঁশের মধ্যে ছিল পাট, ছোবড়া, অ্যাবাকা, হেম্প, কপক, আলপাকা, সিল্ক, মোহেয়ার এবং সিসল। এর বাইরে আরও ১০ ধরনের প্রাকৃতিক আঁশের ব্যাপারে বাণিজ্যিক আগ্রহ রয়েছে (www.dnfi.org)।

শতাব্দীর পর শতাব্দী গেছে, আঁশের মোট চাহিদার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক আঁশের হিস্যায় নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন এসেছে। আঠার শতকের আগ পর্যন্ত আঁশের প্রাপ্যতার পুরোটাই ছিল প্রাকৃতিক আঁশ-নির্ভর। সতের শতকের শুরুর দিকে উল ও লিনেনের ব্যবহার ছিল ৯০ শতাংশেরও বেশি। ঊনিশ শতকে এসে্ও, বিশ্বে প্রাকৃতিক আঁশের রাজত্ব ছিল। অবশ্য, তুলার হিস্যাটা বেড়ে উঠেছিল প্রায় ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত। এই বাড়ন্ত ভাবটা অব্যাহত ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজার আগ পর্যন্ত। ওই্ যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে যে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছিল, তার মনুষ্যসৃষ্ট্য আঁশ উৎপাদন তরান্বিত হয়। বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম ভিত্তিক কৃত্রিম আঁশ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যহারে বেড়ে যায়। বর্তমানে সকল ধরনের আঁশের ব্যবহার বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, প্রায় ৬৫ শতাংশই মনুষ্যসৃষ্ট এবং বাকি ৩৫ শতাংশ প্রাকৃতিক আঁশ। প্রাকৃতিক আঁশ মোট যে পরিমাণে ব্যবহার হচ্ছে তার মধ্যে তুলা প্রতিনিধিত্ব করছে ৭০ শতাংশের। পূর্বাভাষদাতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। (https://www.woodmac.com/research/products/chemicals-polymers-fibres/fibres/synthetic-fibres/). অবশ্য, এটা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করার বিভিন্ন কারণ রয়েছে যে প্রাকৃতিক আঁশ ও কৃত্রিম আঁশের মধ্যে এই প্রতিযোগিতাটা একটা্ বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসার উপলক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে।


আঁশের বিবরণীর ক্ষেত্রে বিবেচ্য কিছু বিষয়:

তুলাসহ প্রাকৃতিক আঁশ উৎপাদনের কাজে বিশ্বব্যাপী নিযুক্ত আছেন ২৫০ মিলিয়নের বেশি মানুষ। এটা চাষকাজ থেকে শুরু করে সাপ্লাই চেইনে প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত। নেতৃস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো ও ভোক্তারা প্রাকৃতিক আঁশ থেকে কৃত্রিম আঁশের দিকে ঝুঁকে পড়ার সামাজিক মূল্য আরও নিবিঢ়ভাবে মূল্যায়ন করে দেখছেন। এতে দেখা যাচ্ছে, কৃত্রিম আঁশের দিকে ঝুঁকে পড়ার এই প্রবণতা কিছুটা শ্লথ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম আঁশ উৎপাদনে তূলনামূলক অনেক কম জনবলের দরকার পড়ে।

আমরা ভোক্তা হিসেবে যেসব সীমাবদ্ধতাকে মোকাবিলা করা সম্ভব বলে জানি, সেগুলোকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে এসব কোম্পানি। তারা কেনাকাটা থেকে শুরু করে পরিধান ও ভাগাভাগি পর্যন্ত ভোক্তা যাত্রার প্রতিটি ধাপকে পুনর্কল্পনা করে নিচ্ছে। একজন ডিজাইনার হিসেবে আমার কাছে এটা অত্যন্ত রোমাঞ্চকর- এটা আসলেই বদলে যাচ্ছে। যখন আমরা বিজ্ঞানকে সন্বিবেশ করি- হোক সে রসায়ন, বড় তথ্যভান্ডার, ডিজাইন বা ভোক্তা অন্তর্দৃষ্টি- আামরা তখন ফ্যাশন জাদু পেয়ে যাই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটা আপনার জন্য পছন্দের কাঠামো যুগল এনে দেয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে এটা হয়ে যায় কাপড়ের ভবিষ্যত। এর পুরোটাই ফ্যাশন প্রযুক্তি। আর এর সবই ঘটছে ঠিক এই মুহূর্তে।

প্রাকৃতিক আঁশ থেকে দুরে সরে যা্ওয়ার জন্য কেবল সামাজিকভাবে চড়া মূল্য দিতে হবে, বিষয়টি তেমন নয়। এর পরিবর্তে যে কৃত্রিম আঁশের ব্যবহার বাড়ছে, তার পরিবেশগত মূল্য অনেক চড়া হতে পারে। কৃত্রিম আঁশ একান্তই অনবায়নযোগ্য সম্পদের ওপরে নির্ভরশীল। যেমন. পেট্রোলিয়াম ও কয়লা। কৃত্রিম আঁশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এগুলোই কাচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেখানে তুলা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক আঁশ দ্রুতই নবায়নযোগ্য এবং প্রায়শই এগুলো উদ্ভিদজাত উপাদানের আদলে কার্বন নিরপেক্ষ হয়ে থাকে। এগুলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত করার পরিবর্তে আরও নিষ্ক্রিয় করে নেয়। কৃত্রিম আঁশের পরিবেশগত চড়া মূল্যের একটা উদাহরণস্বরূপ, চীন গত চার দশকে কৃত্রিম আঁশের একটা ক্ষুদ্র উৎপাদনকারী থেকে এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়েছে। চীনে কৃত্রিম আঁশ উৎপাদনের বিষয়টি ব্যাপক দূষণের দিকে গড়িয়েছে। এর ফলে অনেক কারখানা বন্ধ করে দিতে হয়েছে না হয় অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে তারা (https://www.npr.org/sections/p... ).।

জমি, জলাভূমি, হৃদ এবং সাগরে কৃত্রিম আঁশের ক্ষুদ্রকনা দূষণের বিষয়টি ক্রমবর্ধমানভাবে কৃত্রিম আঁশ শিল্পের জন্য একটা হুমকি হয়ে উঠছে। এটা ঘটছে বিশ্বব্যাপী মানব্ ও প্রাণী স্বাস্থ্যের জন্য এটা ক্রমবর্ধমান একটা হুমকি হয়ে ওঠার কারণে (https://www.theguardian.com/environment/2016/jun/20/microfibers-plastic-pollution-oceans-patagonia-synthetic-clothes-microbeads; https://www.vox.com/the-goods/...)।

ভুমি ও জলাবেষ্টিত পরিবেশে তুলা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক আঁশ অধিকতর সহজেই পচে যায়। এ কারণে ওই সমস্যার একটা সমাধান হিসেবে ক্রমবধমানভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে এগুলোই। “কৃত্রিম আঁশের ক্ষুদ্রকণা দূষণ কমানোর প্রয়াসে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটা অবশ্যই হতে হবে বৈশ্বিক বস্ত্র উৎপাদনে প্রাকৃতিক আঁশ ব্যবহারের হিস্যা সর্বোচ্চ হারে বাড়ানোর বিষয়টি। কারণ, হাতে এই প্রমাণ রয়েছে যে এগুলো তূলনামূলক দ্রুততার সঙ্গে পচে মিশে যায় এবং পরিবেশে জমে থাকে না, যেমনটি ঘটে পলিয়েস্টার ও নাইলনের ক্ষেত্রে।” (বস্ত্রখাত থেকে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র্রকণার দূষণ: একটি সাহিত্য পর্যালোচনা http://www.hioa.no/content/dow... ; https://www.cottonworks.com/to...)

এটা সত্য যে প্র্রারম্ভিক সময়ের তূলনায় এখন পলিয়েস্টার ও অন্যান্য কৃত্রিম আঁশের কার্যক্ষমতা এখন অত্যন্তভাবে বেড়েছে। তবে বৈশ্বিক ভোক্তা পছন্দের ক্ষেত্রে তুলা, উল ও সিল্কই এখন পর্যন্ত শীর্ষে রয়েছে। যেখানে গ্রাহকের এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে কৃত্রিম আঁশ (https://lifestylemonitor.cotto...)। ভোক্তা সব সময়ই উপরে বর্ণিত সক্ষমতার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়, বিষয়টি তেমন নয়। কিন্তু বিপণন করার ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডগুলো ও খুচরা বিক্রেতাদের এটা মাথায় রাখার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবতা হচ্ছে প্রাকৃতিক আঁশ ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রাহকের ঝোঁক প্রবলভাবে বাড়ছে। তাই এমন আঁশ দিয়ে তৈরি পোশাক ও গৃহসজ্জার সামগ্রীর প্রতি আগ্রহ আরও বৃদ্ধির বিষয়টি বাস্তবেই সম্ভব। কারণ, কৃত্রিম আঁশের কারণে জীবনচক্রকে যে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে, সে বিষয়টি একেবারে দৃশ্যমান হয়েছে।

সাপ্লাই চেইনজুড়ে তুলা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক আঁশ সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির উৎকর্ষতা সাধিত হচ্ছে এখনও অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে। এটা উৎপাদন বাড়াতে, খরচ কমিয়ে আনতে, সক্ষমতায় উন্নতি ঘটাতে এবং পরিবেশ-বান্ধব করতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি এমন পণ্য গ্রাহকের কাছেও আবেদন সৃষ্টি করছে। তুলা উৎপাদনকারী পর্যায়ে উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে অনেকগুলো বিষয়। এর মধ্যে রয়েছে উদ্ভিদ প্রজনন, জিপিএস, কম্পিউটারভিত্তিক পদ্ধতি ও যান্ত্রিকীকরণ (https://cottonusa.org/for-mills ; https://cottonusa.org/innovation ; https://thefabricofourlives.com)। সুতা কাটা, কাপড় উৎপাদন ও পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে প্রযুক্তি এনে দিচ্ছে অধিকতর গতি। ঘটছে সক্ষমতা ও গুণগত মানে উন্নতি। আর কমে যাচ্ছে পরিবেশগত প্র্রভাব। এসব প্রযুক্তির অনেকগুলোরই উন্নয়নে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রেখে চলেছে ইউএস কটন। এই শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্বে যে আত্ননির্ভরশীল হওয়ার একটা উদ্যোগ রয়েছে, তার কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে কাজটা করছে ইউএস কটন। (https://cottonusa.org/news/2018/cotton-is-proving-that-a-traditional-fiber-can-be-an-innovation-leader; https://www.cottonworks.com/to... ; https://cottontoday.cottoninc.... )

যদি পোশাক ও গৃহসজ্জার সামগ্রীর সফল জোগানে একটা ‘ভারচুয়াস সার্কেলে’ কাচামাল পছন্দ করা ও কাচামাল প্রাপ্যতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে থাকে, তাহলে সেই সার্কেলে প্রাকৃতিক আঁশ, বিশেষত তুলার একটা বড় ভূমিকা পালন করা উচিৎ। সাপ্লাই চেইনের প্রতিটি লিংকের সঙ্গে কাজ করার জন্য সদা প্রস্তুত রয়েছে কটন ইউএসএ। স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে যথোপযুক্ত পছন্দ ঠিক করার কাজটি সহজতর করতেই এটা করবে তারা (www.cottonusa.org) ।